ডাকসু নির্বাচনে জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী তন্বীর জন্য পদ ছাড়লো ছাত্রদল

সানজিদা আহমেদ তন্বী
সানজিদা আহমেদ তন্বী | ছবি: এখন টিভি
0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বী। তার সম্মানার্থে বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলে এই পদটি শূন্য রাখা হয়েছে। আজ (বুধবার, ২০ আগস্ট) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘তন্বীর প্রতি সম্মান জানিয়ে গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে ছাত্রদল থেকে কেউ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি।’

এর আগে. বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ (বাগছাস)ও এই পদে তন্বীর জন্য মনোনয়ন ছাড়ে। সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে সংগঠনটির ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

নির্বাচনে তন্বী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ছাত্রশিবিরের সাজ্জাদ হোসাইন খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সিয়াম ফেরদৌস ইমন এবং বাম জোটের আলমগীর হোসেনের সঙ্গে।

সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় চিফ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তন্বী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।

গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তন্বী লেখেন, ‘আমার নাম সানজিদা আহমেদ তন্বী। অনেকেই নামেই আমাকে চেনেন, আবার অনেকের কাছে অচেনা। পরিচয়ের সহায়ক হিসেবে ১৫ জুলাই আহত হওয়ার সেই ছবিটি সংযোজন করেছি। জুলাই আন্দোলন ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের আন্দোলন। সুন্দর দেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা থেকেই আমরা অংশ নিয়েছিলাম। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের রক্ত ঝরালেও সাহস হারাইনি। এরপর অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ। নতুন ব্যবস্থার এক বছর পার হলেও অনেক আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। জাতীয় পর্যায়ে কাজের সুযোগ না পেলেও এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে কাজ করার সুযোগ এসেছে। সততা ও ন্যায়বোধের জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

আরও পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৫ জুলাই ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলায় আহত তন্বীর রক্তাক্ত মুখের ছবি ভাইরাল হলে সারাদেশে বিক্ষোভ তীব্র হয়।

এদিকে, ডাকসু নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে ৬৫৮টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি হল সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৮টি হলে বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৪২৭টি মনোনয়নপত্র।

হলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়— ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে সর্বাধিক ১১২টি, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে সর্বনিম্ন ৩৩টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৭৩, জগন্নাথ হলে ৭৪, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৮৬, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ১০০, রোকেয়া হলে ৫৩, সূর্যসেন হলে ৯৫, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৮০, শামসুন নাহার হলে ৪২, কবি জসীমউদ্দীন হলে ১০৬, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৯৮, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৭৯, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৩৯, অমর একুশে হলে ৯১, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৮৮, বিজয় একাত্তর হলে ৯৬ এবং স্যার এএফ রহমান হলে ৮২টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রার্থী একাধিক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারলেও কেবল একটি পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। অন্য পদগুলোর মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে সব কটি মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।

এনএইচ