ভারত-যুক্তরাজ্যের মধ্যে ঐতিহাসিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সই

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ড চুক্তি স্বাক্ষর করেন | ছবি: ব্লুমবার্গ
0

দীর্ঘ আলোচনার পর ঐতিহাসিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করেছে ভারত ও যুক্তরাজ্য। এর পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা, দুগ্ধজাত পণ্যসহ বিভিন্ন খাতে ছয় বিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশ। চুক্তির আওতায় প্রায় ৯০ শতাংশ ব্রিটিশ পণ্যে আমদানি শুল্ক তিন শতাংশে নামিয়ে আনবে ভারত। বিপরীতে যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে ৯৯ শতাংশ ভারতীয় পণ্য।

যুক্তরাজ্যের বাকিংহামশায়ার। দক্ষিণপূর্ব ইংল্যান্ডের এই চেকার্স রেসিডেন্সি মূলত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কান্ট্রি হাউজ। সেখানে ক্রিকেট খেলায় মেতেছে একদল শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গ দিতে এলেন ভারত ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান। বিনিময় করলেন জার্সিও।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতির কারণে বিশ্ববাণিজ্য ব্যবস্থায় যখন অস্থিরতা আর অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। তখন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাজ্য সফর ইঙ্গিত করে- দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে জোর দিয়ে এই শুল্কযুদ্ধ মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো।

ফলাফল এসেছে দীর্ঘ আলোচনার পর। ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হওয়ার পর এই প্রথম কোনো দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করলো যুক্তরাজ্য। ৬ বিলিয়ন পাউন্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির ঘোষণা দিয়েছে দুই দেশ। বিবিসি বলছে, প্রায় ৩ বছর ঝুলে থাকার পর এই চুক্তির কারণে ভারত-যুক্তরাজ্য দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক যেমন দৃঢ় হয়েছে তেমনি অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করছেন মোদি-স্টারমার।

কিয়ার স্টারমার ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে এই চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করেন দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস এবং পিয়ুষ গোয়েল। দ্বিপক্ষীয় এই চুক্তিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার পর সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি হিসেবে দেখেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। আর একসাথে আগামীর ভবিষ্যৎ নির্মাণের অঙ্গীকার নরেন্দ্র মোদির।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, এই চুক্তির আওতায় প্রায় ৯০ শতাংশ ব্রিটিশ পণ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। কর কমবে ব্রিটিশ স্কচ হুইস্কি, গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স, কসমেটিক্স, চকোলেটসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। এছাড়া, আগামী ১০ বছরে যুক্তরাজ্যের ৮৫ শতাংশ পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেবে নয়াদিল্লি। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ৯৯ শতাংশ ভারতীয় পণ্য। যেখানে আছে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের মতো লাভজনক খাত।

এছাড়াও ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কর্মী, আর্থিক ও পেশাদার সেবায় নিয়োজিত কর্মজীবী, যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক, সঙ্গীতজ্ঞ এবং শেফদের মতো পেশাদাররা যুক্তরাজ্যে কাজের সুযোগ পাবেন সহজে- এমন দাবি করছে ভারতীয় গণমাধ্যম।

এসএস