ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে আমদানি শুল্কের প্রভাব পড়বে মার্কিন বাণিজ্যেই

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প | ছবি: সংগৃহীত
0

ট্রাম্পের আগ্রাসী শুল্কনীতি হয় সম্পূর্ণ হাস্যকর, না হয় আলোচনার কৌশল; বলছেন বিশ্লেষকরা। সতর্ক করে বলছেন, আমদানি শুল্কের প্রভাব পড়বে মার্কিন বাণিজ্যেই। শুল্ক পূর্ণ কার্যকর হলে দু'তিন মাসের মধ্যে বাড়তি দ্রব্যমূল্য দেখবে জনগণ। এরই মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব দেখছে মার্কিন পুঁজি ও শ্রমবাজার।

বাণিজ্যিক মিত্র দেশগুলোর রপ্তানি পণ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোটা অঙ্কের শুল্ক আরোপের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বড় ধরনের দরপতনের মুখে বিশ্ব পুঁজিবাজার। শুল্ক এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভালো একটি চুক্তি বের করে আনার চেষ্টায় ব্যস্ত বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান।

সিএফআরএ রিসার্চের চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট স্যাম স্টোভাল বলেন, ‘আমি অবাক হইনি, কারণ প্রেসিডেন্ট সব সময় লোকজনকে অস্থির রাখতে পছন্দ করেন, দেশগুলোকে বোঝাতে পছন্দ করেন যে পরবর্তীতে কী হতে পারে। যেসব দেশ এখনো বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, তাদের উপর চাপ তৈরি করতেই এটি করা হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:

১৯৩০ সালের পর সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করে বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনে এগিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির প্রেসিডেন্ট। ৩৯ শতাংশ শুল্কে স্তম্ভিত সুইজারল্যান্ড, ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক চেপে বসায় উদ্বিগ্ন ভারত। নতুন শুল্ক হার অনুযায়ী, প্রতিবেশি কানাডার অনেক পণ্যে ৩৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ, তাইওয়ানের উপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিশ্ব রাজনীতিতে মিত্র এ সব দেশই শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে আলোচনার আহ্বান জানাচ্ছে।

নতুন এসব শুল্ক হারে অস্থির, অনিশ্চিত বিশ্ববাজার। শুল্ক বসছে জানা গেলেও অস্পষ্ট সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় ও বিস্তারিত পরিকল্পনা। হোয়াইট হাউসের তথ্য, ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন শুল্ক। বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের এই আগ্রাসী শুল্কনীতিকে হয় সম্পূর্ণ হাস্যকর, না হয় ধরে নিচ্ছেন আলোচনার কৌশল হিসেবে।

পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের সিনিয়র ফেলো গ্যারি হাফবাউয়ার বলেন, ‘এটা একটা সম্পূর্ণ হাস্যকর নীতি। একদিন আগে হলে শুধু এটুকুই বলতাম আমি। তিনি আগস্ট ৭ পর্যন্ত শুল্ক কার্যকরের সময় পিছিয়েছেন। এতে হয়তো কিছু দেশ ট্রাম্পের সাথে চুক্তিতে আসতে পারবে এবং ঘোষণার চেয়ে কিছুটা কম শুল্ক পেতে পারে। এতে মূলত মার্কিন বাণিজ্যেই প্রভাব পড়বে এবং শুল্ক পূর্ণ কার্যকরে গড় দ্রব্যমূল্য বাড়বে। অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ নিশ্চিতভাবেই ভোক্তামূল্যে এর প্রমাণ মিলবে।’

ট্রাম্পের নজিরবিহীন সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে ধাক্কা খেয়েছে মার্কিন পুঁজিবাজারও। একই সঙ্গে গেলো ক'মাসে প্রত্যাশার চেয়ে কম কর্মসংস্থানের তথ্য প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম মন্ত্রণালয়, যা মার্কিন শ্রমবাজারে ধীরগতির আভাস। ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি আত্মঘাতী হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য।

সেজু