বন্যা-ভূমিধসে ফিলিপিন্সে প্রাণহানি বেড়ে ২৭, নিখোঁজ ৮

ঘর ছেড়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজার বাসিন্দা

টাইফুন কো-মে’র প্রভাবে ফিলিপিন্সে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি
টাইফুন কো-মে’র প্রভাবে ফিলিপিন্সে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি | ছবি: সংগৃহীত
0

ফিলিপিন্সে টাইফুন কো-মে’র প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধ্বসে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। নিখোঁজদের তালিকায় গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) যোগ হয়েছে আরও ৮ জনের নাম। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ২ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি বাসিন্দা।

রাজধানী ম্যানিলা ও ৩৫টি প্রদেশে টানা চতুর্থ দিনের মতো বন্ধ আছে স্কুল-কলেজ ও সরকারি কার্যক্রম। এদিকে একাধিক মৌসুমী ঝড় ও রেকর্ড বৃষ্টির কারণে চীনের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন করে ঘর ছেড়েছেন ১৯ হাজার বাসিন্দা। অন্যদিকে আকস্মিক বন্যার কবলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্য।

টাইফুন কো-মে’র দ্বিতীয় আঘাতে বিপর্যস্ত ফিলিপিন্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এবার দেখা দিয়েছে বন্যা। প্রান্তিক জনপদ থেকে লোকালয়, যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি।

ঝড়ের প্রভাবে অতিবৃষ্টির কারণে বাড়ছে ভূমিধ্বসের ঘটনাও। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ফিলিপিন্সের পেঙ্গাসিনান প্রদেশে দ্বিতীয় দফায় আঘাত হানে টাইফুন কো-মে।

সপ্তাহব্যাপী এ দুর্যোগে ধসে গেছে ৩ হাজারের বেশি বসতবাড়ি। আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন আড়াই লাখেরও বেশি বাসিন্দা। উদ্ধার অভিযানে স্থানীয়দের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও দমকল কর্মীরা। 

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লুজন প্রদেশের অন্তত ৮০টি ছোটবড় শহরে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি। জাতীয় দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়েছে প্রদেশজুড়ে।

যদিও বৈরি এ পরিস্থিতি ফিলিপিন্সের জন্য নিউ নরমাল—বলছে দেশটির সরকার। প্রতিবছর গড়ে ২০টি মৌসুমী ঝড় আঘাত হানে জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের দ্বাদশ বৃহত্তম এ দেশটিতে।

এদিকে মৌসুমী ঝড় ও এর কারণে সৃষ্ট রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত চীন। দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে বাউডিং প্রদেশে চলতি বছরের জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তা এক বছরের গড় বৃষ্টিপাতের সমান। 

হেবেই প্রদেশে ৬ মাসের গড় বৃষ্টিপাতের মাত্রা গেল বছরের তুলনায় সাড়ে ২৬ শতাংশ বেশি। রয়টার্স বলছে ২০২০ সালের পর এ অঞ্চলটিতে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির প্রকোপে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম শহর সাংহাইয়ে।

এছাড়া পাকিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টির প্রভাবে সৃষ্ট ভূমিধ্বসে নিখোঁজ ১২ পর্যটককে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, ভূমিধ্বসে মাটি চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে। 

গেলো সপ্তাহে দেশটির উত্তরাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধ্বসের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন কয়েক ডজন পর্যটক। যাদের উদ্ধারে এখনও কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।

অন্যদিকে একটানা ভারী বৃষ্টিতে এক রাতেই পানির নিচে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্য। রুইদোসো নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। সেই পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে পাহাড়ি অঞ্চলে। 

পানির তোড়ে ভেসে গেছে পথঘাট। এর আগে, চলতি মাসের ৯ তারিখ প্রথম দফার আকস্মিক বন্যায় অঙ্গরাজ্যটিতে প্রাণ যায় অন্তত ৩ জনের। এদিকে অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা দেখা দিয়েছে শিকাগোর দক্ষিণাঞ্চলে। কোনো কোনো অঞ্চলে কয়েক ঘণ্টায় ১৫২ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এসএইচ