জমি পুনর্দখলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভলোদিমির জেলেনস্কি | ছবি: সংগৃহীত
0

রুশ বাহিনী পা রাখা মানেই ওই ভূমি রাশিয়ার, এমন নীতিতে অটুট দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অন্যদিকে ভূমি পুনর্দখলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ অবস্থায় যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্প-পুতিনের আসন্ন বৈঠক আদৌ কাজে আসবে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে ট্রাম্পের দেয়া বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি রুখে দেয়ার কৌশল হিসেবেই হয়তো আপাতত ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন পুতিন।

পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের আসন্ন বৈঠকের প্রসঙ্গ সামনে আসতেই; যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। এরমধ্যে ইউক্রেনের যেসব ভূমি রাশিয়া দখলে নিয়েছে, তার ভবিষ্যৎ কী হবে তা অন্যতম। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক ম্যাপে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সাল থেকেই রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে ক্রিমিয়া। এছাড়া নতুন করে ইউক্রেনের লুহানস্কের পূর্বাঞ্চল, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চলের ৭০% এরও বেশি দখল রাশিয়ার হাতে। খারকিভ, সুমি এবং দিনিপ্রো, পেট্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশও ইউক্রেনের হাতছাড়া হয়েছে।

শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কী তবে, এসব ভূমি মস্কোর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিসর্জন দিতে হবে কিয়েভের; এটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এখানেই থমকে যেতে পারে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা। কারণ, আগে থেকেই রুশ বাহিনীর হাতে চলে যাওয়া ভূমি পুনর্দখলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। অন্যদিকে, রুশ সেনারা যে ভূমিতে পা রখবে, ওই জায়গাই রাশিয়া- এমন নীতিতে অটুট পুতিন। তবে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন ছাড় দিতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।

চ্যাথাম হাউসের বিশ্লেষক টিমোথি অ্যাশ বলেন, ‘ইউক্রেন হয়তো একটা সময় নত হবে। এছাড়া পশ্চিমা জোটও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। পুতিন হয়তো তার চাওয়ার সবকিছুই পাবেন। পুরো ইউক্রেনও তিনি চাইতে পারেন, এটাই বাস্তবতা।’

এদিকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে ট্রাম্প যে কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছিলেন; তা এড়ানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হওয়া পুতিনের কৌশল হতে পারে বলেও ধারণা বিশ্লেষকদের। কারণ খোদ রাশিয়া সতর্ক করেছে; কিভাবে হুমকি মোকাবিলা করতে হয় তা খুব ভালো করে জানা আছে তাদের।

টিমোথি অ্যাশ বলেন, ‘উইটকফের সঙ্গে আলোচনায় ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পুতিনের সম্মত হওয়া একটি কৌশল। যা হয়তো যুদ্ধ বন্ধের চেয়ে, আগে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা থামানো বড় একটি পদক্ষেপ হতে পারে মস্কোর জন্য।’

এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এখনও পুতিনের ওপরই নির্ভর করছে মস্কোর ওপর তিনি নিষেধাজ্ঞা দেবেন কিনা। তবে, পূর্বের দেয়া আল্টিমেটাম অনুযায়ী শুক্রবার থেকেই এটি কার্যকর হচ্ছে কি -না তাও পরিষ্কার করেননি তিনি।

ডেনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটা তার উপর নির্ভর করবে। আমরা বৈঠক করতে যাচ্ছি, দেখব তিনি সেখানে কী বলেন। তবে, এটি তার উপরই নির্ভর করছে।’

শিগগিরই ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে হতে যাওয়া বৈঠকের খবরের মধ্যেও রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। বৃহস্পতিবারের হামলায় ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে হাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি রাশিয়ার। ওই স্থানটি দিয়ে ইউক্রেন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করতো বলে দাবি রুশ বাহিনীর। অন্যদিকে ইউক্রেন জানিয়েছে, তারা ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং রাডার সিস্টেমসহ বেশ কয়েকটি রাশিয়ান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

এসএস