এদিকে আইনি ভিত্তি না থাকায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ফাঁকি রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। একে বাস্তবায়নযোগ্য করতে আইনি ভিত্তি চায় জামায়াতও। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জনগণকে ধোঁকা দেয়ার সাহস পাবে না কোন রাজনৈতিক দল।’
এদিন জুলাই সনদ ছাড়াও সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব, সরকারি কর্ম কমিশন, দুদক, মহা-হিসাব নিরীক্ষক নিয়োগ ছাড়াও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও নির্বাচন প্রক্রিয়াসহ অমীমাংসিত বেশ কয়েকটি বিষয়ে শেষ মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যমত্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করে কমিশন।
সভার শুরুতে সংসদে সরাসরি নারী প্রতিনিধি নির্বাচনে একমত হয় দলগুলো। তবে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি ও নির্বাচন প্রক্রিয়া আছে ভিন্নমত।
সভার বিরতিতে, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আইনি ভিত্তি না থাকায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ফাঁকি রয়ে গেছে। আর জুলাই সনদ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে কমিশনের সময় বাড়ানোর দাবি জানায় গণঅধিকার পরিষদ।’
আরও পড়ুন:
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘যদি সরকার আন্তরিক হয় এবং অন্যান্য দলগুলো যদি সরকারকে সহায়তা করে তাহলে সরকার ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে সকলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটা পরিণত আইনভিত্তিসম্পন্ন এবং সাংবিধানিকতার স্ট্যাটাসের জায়গা থেকেই একটা ঘোষণাপত্র সরকার জারি করতে পারবে।’
সনদ বাস্তবায়নে শুধু অঙ্গীকার নয়, আইনি ভিত্তি দেয়ার জোর দাবি জানায় জামায়াত, এবি পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ তাহের বলেন, ‘জাতীয় সনদ আমাদের মিটিং এর আউটকাম। উনারা বলেছেন উনারা ঠিক করবেন এবং আমাদের কাছে একটা রাফ কাগজ ও পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেটা অপূর্ণাঙ্গ এবং কিছুটা অসঙ্গতিপূর্ণ। এবং যেসব বিষয়ে আমরা ঐক্যমত্য হয়েছি এটাকে তারা অফিশিয়ালি ইম্প্রুভ করেনি। তারপরেও আমরা এটার জবাব দেব।’
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘এ জুলাই সনদের কার্যকর করার বাস্তবতাও সাক্ষরের দিন থেকে বাস্তবায়ন হতে হবে। এটাকে একটা আইনি বাধ্যবাধকতা দিতে হবে। এবং এটার অনেক পন্থা আছে দেয়ার।’
জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘জনগণের অভিপ্রায়ের চেয়ে বড় সাংবিধানিক মেন্ডেট আর কিছু হতে পারে না। এখন জনগণের অভিপ্রায়কে একটা সাংবিধানিক প্রক্লেমেশনের মাধ্যমে জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন:
এদিকে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নির্বাচিত সংসদেই ভরসা বিএনপির। জনগণকে ধোঁকা দিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা উপেক্ষা করার সাহস কোন রাজনৈতিক দল করবে না বলে মত দলটির।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে যাতে আর কোনো ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি না হয় সেটা সাংবিধানিক বা সংসদীয়ভাবে হোক, ব্যক্তি স্বৈরতান্ত্রিক হোক বা একনায়কতান্ত্রিক হোক সেটা যেকোনভাবেই উদ্ভব যাতে না হয় তার জন্য আমরা কি করছি, এটা আমাদেরই প্রস্তাব।’
বৈঠক শেষে কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানান, সংসদের নারী আসন পর্যায়ক্রমে ৫০ থেকে ১০০ তে উন্নীতে একমত দলগুলো, তবে আগের নিয়মের দাবি বহাল রেখে নোট অফ ডিসেন্ট দিয়েছে বিএনপি। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে খসড়া জুলাই সনদ নিয়ে ঐক্যমত্য আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এখন পর্যন্ত ১৪টি বিষয়ে ঐক্যমত্যে আসা গেছে বলে জানায় কমিশন।