কয়েকদিন আগের বিএনপির শীর্ষ এক নেতার বক্তব্যে স্পষ্ট জামায়াত ও বিএনপির জোট হচ্ছে না আসন্ন নির্বাচনে। তবে এবার ধানের শীষের সঙ্গী কারা সেটির আভাস মিলেছে।
সপ্তাহখানেক আগে দুই ধাপে ৪২টি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকে বসে বিএনপি। যেখানে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সাথে জোটবদ্ধ নির্বাচন ও পরবর্তীতে ঐকমত্যের জাতীয় সরকার গঠনের ইঙ্গিত দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন, সরকার গঠন সবকিছুতেই তার যে দীর্ঘদিনের যুগপৎ আন্দোলনের সাথী যারা আছেন, তাদের নিয়েই করবেন বলে তারেক রহমান আমাদের জানিয়েছেন। আমরা এটাই বিশ্বাস করতে চাই।’
এর মধ্যে ছয়টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চও রয়েছে বিএনপির জোটে। আর আগে থেকে ১২ দলীয় জোট তো আছেই। যারা ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে ধানের শীষ নিয়ে।
গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘আমাদের বলেছেন যে আপনারা প্রস্তুতি নেন নির্বাচনের। অতীতে আমরা আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, এখনও আছি। জোটবদ্ধ নির্বাচন করবো, জোটবদ্ধ সরকার গঠন করবো। এটা উনি সবসময়ই বলছেন।’
১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে অতীতে আন্দোলনে যেমন ছিলাম, এই নির্বাচনেও আমরা একসঙ্গে থাকবো। বিএনপির যে প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো। কতগুলো ছিট বা কিছু, সেগুলো নিয়ে আলাপ হয়নি এখনও।’
আরও পড়ুন:
এদিকে জামায়াতে ইসলামীকে ঘিরে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে হতে পারে আরেকটি জোট। যেখানে থাকতে পারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোট ও নেজামে ইসলামের মতো দলগুলো। মতপার্থক্য ভুলে ভোটের মাঠে এবার সংঘবদ্ধ শক্তি প্রদর্শনের অপেক্ষায় তারা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘ইসলামী সংগঠনগুলোর মধ্যে যে ছোটখাটো বিষয়ে মতপার্থক্য আছে এটা এখানে খুব একটা কার্যকর হবে না। তবে এসমস্ত বিষয়কে কোনো কোনো দল, কোনো কোনো গোষ্ঠী উস্কে দেয়ার চেষ্টা করবে। তারা এবার সুবিধা করতে পারবে না। একটা পোলারাইজেশন হবে। ইসলামের পক্ষের শক্তিটা একটা বড় রকমের শক্তি নিয়ে মাঠে নামবে।’
তবে এ দুই জোটের সাথেই লিয়াজোঁ রয়েছে কোনো কোনো দলের। যারা জোটের বাইরে বিকল্প শক্তি হিসেবে কাজ করতে চায়।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের নেতাকর্মীদের স্পিরিটের জায়গাটা হচ্ছে যে, বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার জন্য আমাদের এককভাবে নির্বচনের দিকে গিয়ে যাওয়া। ধর্মভিত্তিক দলগুলোর জোট বা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীক জোটের মধ্যে যাওয়ার আমাদের চিন্তাভাবনা নাই। জাতীয় বোঝাপড়া ভিত্তিতে কোনো জোট হয় এবং যদি কোনো মেরুকরণ হয়, সেক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করবো।’
আরও পড়ুন:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দৃশ্যমান দুই জোটের বাইরে হতে পারে আরেকটি জোট। যার নেতৃত্ব দেবে এনসিপি।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, ‘তিনটি রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে দুটি যদি জোটবদ্ধ হয়, তৃতীয় যে শক্তি সেও নিশ্চয়ই চেষ্টা করবে একটা জোটবদ্ধ হওয়ার জন্য যেন তাদের শক্তি কিছুটা বাড়ে। আবার এমনও হতে পারে, যারা বিএনপি জোটে যেত বা জামায়াতের জোটে যেত তাদের কেউ কেউ মিলে এনসিপির সঙ্গে মিলে একটা তৃতীয় জোট হতে পারে।’
আর রাতের ভোট ও আমি ডামি নির্বাচনের বৈধতা দেয়া দল জাতীয় পার্টির অবস্থান বরাবরের মতোই অস্পষ্ট।